লাল চাল বা ব্রাউন রাইস
ধান থেকে খোসা ছাড়ানোর পর পরই পাওয়া যায় ব্রাউন রাইস বা লাল চাল। ধানের তিনটি অংশ থাকে। ফাইবার-ভরা বাইরের স্তরটি তুষ, একদম ভেতরের স্তরে থাকে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বীজ যা এন্ডোস্পার্ম নামক কঠিন মধ্যম স্তর দিয়ে আবৃত। বাইরে থাকা তুষের খোসা ফেলে দেয়া হয়।
সাধারণত আমরা যে চালের ভাত খাই অর্থাৎ সাদা চাল অপেক্ষা এই লাল চাল স্বাস্থ্যের জন্য অধিক উপকারী।
ব্রাউন রাইস বা লাল চাল খাওয়ার উপকারিতা
লাল চালের পুষ্টিগুণ:
যদিও সাদা চালের মতো লাল চালে ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট ভরপুর, তবে অন্যান্য প্রায় সকল পুষ্টি ক্ষেত্রে বাদামী বা লাল চাল সাদা চালকে ছাড়িয়ে যায়।
এই গোটা শস্যটি ফোলেট, রাইবোফ্লাভিন (বি-২), পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের একটি ভাল উৎস। উপরন্তু, লাল চালে অধিক হারে ম্যাঙ্গানিজ বিদ্যমান।
ম্যাঙ্গানিজ শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা হাড়ের বিকাশ, ক্ষত নিরাময়, পেশী সংকোচন, বিপাক, স্নায়ুর কার্যকারিতা এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। মাত্র এক কাপ লাল চাল খেলে প্রায় সমস্ত দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পুষ্টি পূরণ সম্ভব।
লাল চালে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফেনল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। এটি হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং অকাল বার্ধক্যের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
ওজন কমাতে লাল চালের ভূমিকা:
লাল চাল ওজন কমাতে সহায়ক। সাদা চালের তুলনায় এটি বেশি ফাইবার এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর।
১৫৮ গ্রাম লাল চালে প্রায় ৩.৫ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা সাদা চালের চেয়ে অনেক বেশি। ফাইবার দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, ক্যালোরি গ্রহণ কমাতে সাহায্য করে, এবং পেটের মেদ কমায়।
হার্টের সুস্থতায় লাল চাল:
লাল চালের ফাইবার এবং লিগনানস নামক যৌগ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা বজায় রাখে।
উচ্চ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে:
লাল চাল সাদা চালের তুলনায় কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার ডায়াবেটিস আক্রান্তদের উপকার করে।
গ্লুটেনমুক্ত বিকল্প:
লাল চাল প্রকৃতিগতভাবেই গ্লুটেনমুক্ত, যা গ্লুটেনে অ্যালার্জি থাকা ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ। এটি গ্লুটেনমুক্ত খাবার হিসেবে ক্র্যাকার, পাস্তা, এবং অন্যান্য পণ্যে ব্যবহার করা হয়।
সতর্কতা:
আইবিএস আক্রান্তদের জন্য ঝুঁকি:
লাল চালের ফাইবার আইবিএস রোগীদের সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সতর্কতা:
ডায়াবেটিস রোগীরা লাল চাল খাওয়ার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নজরে রাখুন।
কিডনি রোগীরা:
ডাক্তাররা কিডনি রোগীদের লাল চাল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
লাল চাল ও আর্সেনিক:
লাল চালে থাকা আর্সেনিক দীর্ঘদিন ধরে খেলে ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কোথায় পাবেন লাল চাল?
আইবণিক শপ-এ পাবেন অথেন্টিক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর লাল চাল। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য লাল চালকে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।